Heart Touching Bangla Romantic Love Story ~ ভালোবাসার গল্প Part 3
রোম্যান্টিক বাংলা ভালোবাসার গল্পের ৩য় পাঠ এবং শেষ পর্ব আজ আপনাদের সাথে সেয়ার করতে চলেছি। আগের দুটি পোস্টে আপনাদের ভালো রেসপন্স পেয়েছি তাই এই ভালোবাসার গল্পের তৃতীয় পর্বটি নিয়ে হাজির হলাম। আসা আছে এটাও ভালো লাগবে আপনাদের সকলের।

নীলিমার ফোনের রিং বেজে উঠলো
নীলিমা: হ্যালো
আবির: হ্যালো নীলিমা আমি এখন কোথায় বলোতো?
নীলিমা: বলতে পারছিনা তুমি কোথায়। প্লিজ তুমি বলে দাও।
আবির: আমি এখন ফ্লাইটে। ভারতের আসছি আমার কলকাতার মাটিতে, আর তোমার কাছে।
নীলিমা: কি ভীষণ আনন্দ হচ্ছে আবির আমার এই বার্তা শুনে। ওয়েলকাম টু কলকাতা। তোমাকে মন থেকে স্বাগতম জানাই।
আবির: ওকে ঠিক আছে। শোনো কি বলছি আমার এই নম্বরটা সেভ করে রাখো। ইন্ডিয়াতে যে কদিন আছি এই নম্বরটা থাকবে। আর আমি এখন রাখি এবার গাড়িতে উঠবো। বাড়িতে পৌঁছে খেয়েদেয়ে তোমাকে আবার কল দেবো।
নীলিমা: বেশ তাই করো। আর শোনো সাবধানে আসবে।
আবির: হ্যা রে বাবা। তুমি শুধু শুধু দুশ্চিন্তা করছো।
নীলিমা: আর হ্যা শোনো
আবির: হ্যা বলো শুনছি,
নীলিমা: আমাকেনা আজ একটা জায়গায় যেতে হবে। তাই আজ আর ঘুম থেকে উঠে তোমার কল করার কোনো দরকার নেই। আর তুমি কদিন তোমার ফ্যামিলিকে বেশি বেশি টাইম দাও, কতো দিন পর বিদেশ থেকে ফিরলে। আমাকে বেশি ফোন টোন দেয়ার দরকার নেই বুঝেছ। আর আমি ওই 29th এ ঠিক গোয়া পৌঁছে যাবো।
আবির: আরে কি হলো হটাৎ, এমন কথা বলছো কেনো?
নীলিমা: না কিছু হয়নি এমনি বলছি।
আবির: ওকে ঠিক আছে, তুমি যা ভালো বোঝ।
29 তারিখে আবির আর নীলিমার দেখা করার দিন, আবির ফোন দিল নীলিমাকে।
আবির: এই মালবিকা কোথায় তুমি, আমি পৌঁছে গেছি গোয়া, কোথায় তুমি?
নীলিমা: আরে বাবা এইতো আমিও পৌঁছে গেছি, সারাক্ষণ শুধু তোমার এক্সাইটমেন্ট।
আবির: আচ্ছা বলো এখন কেমন আছো,?
নীলিমা: কেনো কি হয়েছে আমার, কেমন আছি হঠাৎ জিজ্ঞাসা করছো?
আবির: আমি ভেবেছিলাম তুমি আসবেনা।
নীলিমা: তাইতো ঠিক করেছিলাম আসবোনা। তার পর ভাবলাম এতো ভালো একটা প্রাকৃতিক সুন্দর্য্য, আর ব্রিচ গুলো সব মনে পরে গেলো, বেরিয়ে পরলাম।
আবির: বাহঃ তার মানে আমার কোনো ভ্যালুই নেই তাইতো। পুরোটাই হওয়া।
নীলিমা: এই আবির দাড়াও আমি এখনি গাড়িথেকে নামবো, লাগেজ গুলো সব ঠিক করে নেই।
আবির: ওকে ওকে শোনো আমি ওই ডানদিকে থাকবো।
গাড়ি থেকে নেমে আবির কে দেখতে পেলো নীলিমা, কফিসফের ডান দিকে দাড়িয়ে।
নীলিমা: হাই আবির!
আবির: হাই!
নীলিমা: ইউ আর লুকিং সো গুড,
আবির: ইউ আর লুকিং ভেরি ভেরি গুড,
নীলিমা: এইতো বাজে কথা বললে আমি মোটেও ভালো নেই, আই অ্যাম সো টায়াড। আচ্ছা শোনো আমি কিন্তু ভীষণ এক্সসাইটেড, আমরা জাস্ট হোটেলে যাবো লাগেজ গুলো রাখবো আর তার পর সোজা ব্রিচে ঝাঁপ দেবো।
আবির: হা হা হা …….
নীলিমা: আর এই চশমার ফ্রেমটা কি তোমার নতুন নিলে? কই এটা দেখিনি তো ভিডিও কলে!
আবির: হ্যাঁ হ্যাঁ এটা নতুন নিলাম, এই গোয়ার জন্য আসবো বলে তৈরি করিয়েছি। চলো চলো বাস এসে গেছে উঠি এবার।
নীলিমা: হ্যা হ্যা চলো উঠি।
আবির: বাবা তুমি এতো দূরে দূরে বসেছ কেনো। এদিকে সরে আসো।
নীলিমা: ওরে বাবা ছেলের আবদার দেখো! তুমি কি চাও আমরা নবদম্পতির মতো গায়ে গা ঘেঁষে বসে গোয়া ঘুরবো?
আবির: হা হা হা সেই ভালো…….
বাস ছুটে চললো গোয়ার নেচার ওয়ের দিকে, আবির আর নিলাম সেই বাসের মধ্যে দিয়ে অনেক দূর প্রযন্ত দেখতে পাচ্ছে। তাদের দৃষ্টি দূরের সবুজ ঘেরা পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। দুজনের মনে ভীষণ আনন্দের উচ্ছ্বাস। বাস গন্তব্য স্থলে পৌঁছল।
আবির: তুমি আগাও আমি সমস্ত জিনিস পত্র বাস থেকে নামিয়ে, টাকা পয়সা মিটিয়ে আসছি।
নীলিমা: ওয়াও কি সুন্দর প্রকৃতি। আবির তুমি তাড়াতাড়ি আসো?
আবির: আসছি আসছি।
নীলিমা: ও মই গড কি দারুন হোটেলটা।
ওয়েটার: অয়েল কম ম্যাম,
নীলিমা: আমি কি একটু ঘুরে দেখতে পারি চারপাশটা।
ওয়েটার: অফকোর্স ম্যাম।
নীলিমা: ওকে থ্যাংক ইউ।
এতক্ষণে আবিরও চলে এলো হোটেলে দুজনের কথা হচ্ছে……
নীলিমা: আবির দেখো ছাদ টা দেখো, এই ছবিটাই ওয়েব সাইটে দেওয়া আছে, মনে পড়ছে তোমার?
আবির: হ্যাঁ মনে পড়ছে।
নীলিমা: আচ্ছা ওটা কি পার্ক না কিগো পেছুনর দিকে?
আবির: হ্যা তাই হবে।
নীলিমা: আমি চললাম এখন ওদিকে।
আবির: ওকে জাও চটপট ফিরে এসো। আমি রুমে আছি সব কিছু ঠিক আছে কিনা দেখি।
নীলিমা হোটেলের চারিপাশ ঘুরে দেখে এলো এবং শেষে হোটেলের রুমে প্রবেশ করলো।
নীলিমা: ওয়াও! ও মই গড কি ভীষণ সুন্দর ওয়াশ রুমটা। আবির তুমি দেখেছো? বার্থ রুমের উপরটা দেখো কাঁচ দিয়ে পুরো আকাশটা দেখা যাচ্ছে।
আবির: নীলিমা এই বারান্দার দিকটা এসো।
নীলিমা: ওয়াও কি সুন্দর! পুরো মনটা ফ্রেশ হয়ে গেলি তাইনা?
আবির: হ্যাঁ….
নীলিমা: আমি কিন্তু আজ কোথাও বের হচ্ছি না। এই চেয়ারের উপর বসে পায়ের উপর পা তুলে শুধু সবুজ দেখবো।
আবির: বিউটিফুল তাইনা?
নীলিমা: হুম প্রচন্ড
আবির: নীলিমা থ্যাঙ্কস ফর কামিং হেয়ার।
নীলিমা: থ্যাঙ্ক ইউ টু।
আবির: একটা কথা বলি? তোমার লিপিস্টিক টা একটু মোছনা গো, বড্ড ড্রাক।
নীলিমা: এই শুরু হলো। অনেক ডিমান্ড তোমার। ওকে ঠিক আছে দাও তোমার রুমাল টা দাও। দেখো এবার ঠিক আছে।
আবির: আরে তোমার ন্যাচারাল লিপ কালারটা অনেক বেশি সুন্দর লাগছে।
নীলিমা: এটাও যথেষ্ট মন উত্তেজক একটা ব্যাপার তুমি বুঝবে না। যাই হোক তুমি আমার বড্ড কমপ্লিমেন্ট দাও সারাক্ষণ আমি মাথাই চড়ে থাকি।
আবির: আই লাভ ইউ হয়ার টু। এই এইটাকি পার্লারে করা চুল। নাকি সত্যি সত্যি এরকমই সুন্দর তোমার চুল গুলো?
নীলিমা: পার্লারের এফেক্ট এক সপ্তাহের বেশি থাকেনা স্নান করলেই চলে যায়। তখনই বুঝতে পারবে আমার চুল এতো সুন্দর কিনা।
আবির: সো কিউট
নীলিমা: আই ডোন্ট লাইক কিউট, আই লাইক হট
আবির: কি হবে হট হয়ে কাকে ছ্যাকা দেবে?
নীলিমা: তোমায়
আবির: এবার টার্গেট আমি
নীলিমা: হ্যা প্রথম থেকেই তো তাই ছিলো।
আবির: ওকে ওকে….
নীলিমা: হে হে হে ন্যাকা, এমন ঢং করছো যেমন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জননা। লন্ডনে কতো এরকম করেছো, সাধু পুরুষ আমার।
আবির: লন্ডনে বিদেশী মেয়েরা এসব দেশি ছেলেদের পাত্তা দেয়না, ওখানে যে সব ইন্ডিয়ান যারা আছে তারা সারা দিন নিজের কাজকর্ম নিয়েই ব্যাস্ত। টাইমই নেই আমাদের মত গোবেচারাদের জন্য। তাই দু দিক থেকেই রিজেক্টেড।
নীলিমা: হা হা হা আহা রে কি দুঃখ।
আবির: হা হা হা আমি কি আর এমনি এমনি তোমার পেচুনে পরে আছি।
নীলিমা: একটা চর মারবো না অসভ্য
আবির: চর মারো, বকো, আদর করো, দূরে সরিয়ে দাও, কাছে টেনে নাও, যা খুশি করো, কিন্তু থেকো প্লিস। আমার তোমাকে দরকার নীলিমা।
রোজ মুখ বন্ধ করে অত ঘণ্টা অফিসে কাজ করি শুধু মাত্র তোমার জন্য। ফিরে এসে তোমার মুখটা ভিডিও কলে দেখে মন জুড়ায়। আর আমার শহর টাকে যখন মিস করতাম তখন মনে হত, আমি নেইতো কি হয়েছে। আমার শহরটাতো আছে তোমার সঙ্গে।
নীলিমা: ওয়াও এভাবেতো কখনো ভেবে দেখিনি। সব সময় ভবি আমরা নেই নেই নেই। বাট আমার শহরের সাথেইত তুমি আমার সঙ্গে আছো।
তুমি খুব ভালো আবির, তোমার বিষয়ে কোনো কথা হবেনা তুমি অপূর্ব।
আবির: তুমিও খুব ভালো নীলিমা।
নীলিমা: ধ্যাত ছাই ভালো আমি।
আবির: আরে একটা ফেইল্ড ম্যারেজ মানেই কেউ খারাপ হয়ে যায় না।
নীলিমা: আমি ভালবাসতে জানিনা।
আবির: তোমায় ভালবাসতে হবেনা, আমি বাসবো।
নীলিমা: বাট আই হার্ট ইউ। আমি আবার কষ্ট দিয়ে ফেলবো।
আবির: ওরে বাবারে দেখি দেখি চোখের জল মুছিয়ে দিই। এই চোখ শুধু সুন্দর দেখার জন্য। অশ্রু ঝরিয়ে বন্যা অনার জন্য নয়। এসো এসো কাছে এসো। আরো কাছে।
নীলিমা: না সরে যাও। এখনি সব কমপ্লিকেটেড হয়ে যাবে।
আবির: হোক না ক্ষতি কি তাতে। এক সঙ্গে ম্যাপ দেখে সেই কম্প্লিকেসন থেকে বেরিয়ে আসবে দুজনে। এসো কাছে এসো।
নীলিমা: শোনো তুমি আবার পরে বলবে নাতো? আই হ্যাভ কিসড ইউ।
আবির: তোমার মনে হয় আমি সেরকম কিছু বলবো। আমি তো আবার কদিন পরেই ফিরে যাবো। তখন তুমি যেমন খুশি যার সঙ্গে খুশি ভালো থেকো। আমি কিছু জিজ্ঞাসা করবো না।
নীলিমা: দেখলে অমনি রাগ হয়ে গেলো। যে কারণে আমি কাউকে সিরিয়াসলি ভালোবাসতে চাইনা। আমরা এতো কাছাকাছি এখন। এতো কিছু শেয়ার করছি। আর তুমি কতো সহজেই দূরে সরিয়ে দিলে তাইনা। গা হাত পা ঝেরে গো ব্যাক টু লন্ডন। কি ভরসায় কমিটমেন্ট করি বলোতো।
আবির: ওরে বাবারে এই মেয়েটাকে বোঝানোতো খুব মুশকিল। বললেও দোষ না বললেও দোষ। কই দেখি দেখি আবার চোখে অশ্রু। আর কান্না নয় মোটেই। এই নাও জল খাও।
নীলিমা: তুমি খাও আমি খাবোনা।
আবির: আরে তুমি খাও চোখদিয়ে এতটা জল বেরিয়ে গেলো। খেয়ে নাও নাহলে জলের ঘাটতি হয়ে যাবে।
নীলিমা: ধ্যাত।
আবির: এই নীলিমা চলো?
নীলিমা: কোথায়?
আবির: আরে বাবা কোথাও না বলছি চলো আমরা দুজনে একটা কমিটমেন্ট করি।
নীলিমা: আমি জানি তুমি কি বলবে, আচ্ছা কেনো তোমার ভয় লাগছে, তাই ওই ভয় ভাঙাতে এই কমিটমেন্ট?
আবির: মেঘলা করে আসছে বৃষ্টি নামবে, সব ধুয়ে মুছে ফেলে আমরা নতুন জীবন শুরু করবো। নীলিমা এই কি হলো টাকাও আমার দিকে।
নীলিমা: তাকাবোনা…..
আবির: কেনো কি হলো!
নীলিমা: আমার ভয় কেটে গেছে আবির, দেখো আমার চোখে খুশির অশ্রু। প্লিজ তুমি তুমি এটা মুঝে দিয়োনা এই অশ্রু ঝরতে দাও। আর এভাবেই যেনো তোমাকে আমি কাছে পাই সারাজীবন ভয়হীন ভাবে। আই লাভ ইউ আবির আই লাভ ইউ সো মাচ।